সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় যাচ্ছে না যে ৫ বিশ্ববিদ্যালয়

  © ফাইল ফটো

সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় যাচ্ছে না বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)। সম্প্রতি পৃথক পৃথকভাবে তারা কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষায় না যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এছাড়া ১৯৭৩ সালের আদেশে চলা বাকি তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এ আয়োজনে না আসার সম্ভাবনা বেশি।

তবে শিগগিরই তাদের শিক্ষা পরিষদের (একাডেমিক কাউন্সিল) সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। ইউজিসি জানিয়েছে, এ পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় না এলে বাকিদের নিয়ে আসন্ন শিক্ষাবর্ষ থেকেই কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

ইউজিসির সদস্য (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক দিল আফরোজা বেগম বলেন, তারা আগে থেকেই ধারণা করছিলেন, বুয়েট হয়তো কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষায় আসবে না। এমনকি স্বায়ত্তশাসিত চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ও না আসতে পারে। শেষ পর্যন্ত যদি তারা নাই আসে, তাহলে বাকিদের নিয়েই এবার কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।

বর্তমানে দেশে ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলছে। তবে ৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এগুলোতে প্রথম বর্ষে প্রায় ৬০ হাজারের মতো আসন রয়েছে। এর বিপরীতে পরীক্ষা দেন কয়েক লাখ শিক্ষার্থী।

এসব শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক ভোগান্তি এবং আর্থিক ব্যয় কমাতে সাত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পর আসন্ন শিক্ষাবর্ষ থেকে দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে গুচ্ছভিত্তিক বা সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার উদ্যোগ নেয় ইউজিসি। কিন্তু কিছুদিন আগে অনেকটা আকস্মিকভাবে গুচ্ছভিত্তিক বা সমন্বিত পরীক্ষার পরিবর্তে কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ নিয়ে বিতর্ক ও দ্বিমত আরও বাড়তে থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সমমনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে একেকটি গুচ্ছ করে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তটি ভালো ছিল। বর্তমানে দেশের মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষাও সেভাবে হয়। এমনকি গত বছর কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই সাত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছভিত্তিক বা সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কতটা ভালো হবে, তা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

তারা বলছেন, কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষায় কলা, বিজ্ঞান ও বাণিজ্য শাখার বিষয়গুলোর জন্য তিনটি পৃথক পরীক্ষা হবে। এই ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের একটি নম্বর (স্কোর) দেওয়া হবে। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের শর্ত অনুযায়ী আলাদা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আবেদন আহ্বান করবে। এর ভিত্তিতে নতুন করে আর ভর্তি পরীক্ষা না নিয়ে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার প্রাপ্ত স্কোরকে বিবেচনা করে শিক্ষার্থী ভর্তি করবে।

কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং বুয়েটের উপাচার্যরা ইউজিসিকে জানান, এ বিষয়ে তাদের শিক্ষা পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে জানাবেন। ইউজিসির চাওয়া ২৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ বিষয়ে মতামত জানাতে হবে। এর মধ্যেই বুয়েট গত বুধবার শিক্ষা পরিষদের সভা করে আগের মতোই ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

পরদিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ও এ বছরই কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষায় না যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পরিষদের সভা ডাকা হয়েছে ২৪ ফেব্রুয়ারি। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষকের মনোভাব হলো, তারা কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষায় যেতে রাজি নন। অবশ্য শিক্ষা পরিষদের সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য নূরুল আলম বলেন, শিগগিরই শিক্ষা পরিষদের সভা করে তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।


সর্বশেষ সংবাদ