ডিসির থেকে ভর্তির টাকা নিয়ে অস্বীকার করলেন শিক্ষার্থী

  © ফেসবুক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর টাকার অভাবে ভর্তি হতে না পারায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক (ডিসি) এসএম মোস্তফা কামাল বিল্লাল হোসেন নামে ওই শিক্ষার্থীর হাতে ১০ হাজার টাকার একটি চেক তুলে দেন। কিন্তু ডিসির হাত থেকে টাকা নেওয়ার পর তা অস্বীকার করেছেন বিল্লাল।

এদিকে শিক্ষার্থী বিল্লাল হোসেনের মা নিজেও এই টাকার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, বিল্লালের বাবা খুবই অসুস্থ। আমি শ্রমিকের কাজ করে বিল্লালকে লেখাপড়া শিখিয়েছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য সুযোগ পেয়েছে বিল্লাল। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চায় বিল্লাল। কিন্তু ভর্তির জন্য ১৫-১৬ হাজার টাকা লাগবে, সেটি এখনো জোগাড় হয়নি। অনেকেই দিতে চেয়েছেন। কিন্তু কেউ দেননি।

তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার বিল্লালকে একজন সাতক্ষীরায় ডেকে নিয়ে যায়। তবে তাকে কোনো সহযোগিতা দেয়া হয়নি। সহযোগিতা দেবেন বলেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিল্লাল হোসেনের হাতে ১০ হাজার টাকার একটি চেক তুলে দিয়ে ওই ছবিসহ ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ডিসি এসএম মোস্তফা কামাল।

স্ট্যাটাসে ডিসি লিখেছেন, ‘সাতক্ষীরার অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী মো. বিল্লাল হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ভর্তির সুযোগ পায়। কিন্তু আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে ভর্তি হতে পারছিল না বিল্লাল। এ অবস্থায় তার প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া হয়। বিল্লালের হাতে ১০ হাজার টাকার চেক তুলে দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ভালোভাবে পড়াশোনা করে তাকে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার অনুপ্রেরণা দেয়া হয়েছে।’

ডিসির কাছ থেকে সহযোগিতার পাওয়ার অনুভূতি জানতে যোগাযোগ করা হয় বিল্লাল হোসেনের পরিবারের সঙ্গে। যোগাযোগ করা হয় ডিসির সঙ্গেও। কিন্তু শিক্ষার্থী বিল্লাল হোসেন ও তার মা তাসমিন আরা খাতুন ডিসির কাছ থেকে সহযোগিতা পাওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন।

ডিসির সহযোগিতার কথা তাসমিন আরা খাতুন অস্বীকার করার পর যোগাযোগ করা হয় বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে। বিল্লাল হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য টাকার প্রয়োজন। অনেকে দিতে চেয়েছেন, তবে এখনো কেউ দেননি।

ডিসি এসএম মোস্তফা কামাল আজ আপনার হাতে ১০ হাজার টাকার একটি চেক দেননি এমন প্রশ্নের জবাবে বিল্লাল হোসেন বলেন, না। বিভিন্ন মানুষ এখন পর্যন্ত সাত হাজার টাকা দিয়েছেন। আজ নাহিদ নামের একজন সাতক্ষীরায় আমাকে ডেকে নেন। কিন্তু কোনো সহযোগিতা দেননি। তবে দেবেন বলেছেন।

এ বিষয়ে ডিসি এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, টাকার অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারছে না বিল্লাল হোসেন। বিষয়টি আমার নজরে আসার পর তাকে ডেকে ১০ হাজার টাকার একটি চেক দেয়া হয়। কিন্তু এখন অস্বীকার করলে আমিম কি করব।

বিল্লাল হোসেন সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার সোনাবাড়িয়া গ্রামের আমজেদ আলী ও তাসমিন আরা খাতুনের ছেলে। কলারোয়া উপজেলার সোনাবাড়িয়া সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও কলারোয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন বিল্লাল।


সর্বশেষ সংবাদ